Tuesday, August 31, 2021

সোনালী চক্রবর্তীর গদ্য

 

কমল অথবা পলাশ অথবা সলিচ্যুড ইত্যাদি...
পাহাড়ি কনভেন্টের কুয়াশায় শ্রী পঞ্চমী বলে আলাদা কোনো রোদ্দুর ওঠে না। সেখানে অনেক সন্তের আলো বিষণ্ণ পাইনের বনে লুকিয়ে থাকে। একটা মেয়ে অর্কিড ঝুলনো পাকদণ্ডী বেয়ে একা হাঁটতে হাঁটতে কৈশোর পেরিয়ে যায়। রোজ একটা করে ঘন্টার দীর্ঘ ঢং এর সঙ্গে অনেক দূরে অজস্র মেরিগোল্ড আর কুন্দের একে অন্যের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলার অদ্ভুত ঝর্নার কোনদিন কোনো মিল থাকে না, সে জানে, খোঁজেনি। শাড়ি আর ধুতির রামধনুতে বছরে একটা করে দিনের সকাল এত হলুদ হয়ে যায় পৃথিবীর কোনো কোনো প্রান্তে, একা এস্রাজ বাজাতে বাজাতে, ঘুঙুর বাঁধতে বাঁধতে, বই এ ডুবে যেতে যেতে সে তাকিয়ে দেখার সময়ও পায়নি। কিন্তু সে অদ্ভুত মিল পেয়েছে ভাবতে বসে একটি বীণা যতটা একা ঠিক ততটাই তার দেবী। কত রহস্যের মেঘ তার শুভ্র উপস্থিতির অন্তরালে। কত আয়োজন অথচ কে পায় তাকে? বলা ভালো কে চায় তাকে? তাকে যে চায় তাকে নি:স্ব হতে হয় আগে। সৃষ্টির আদি শর্ত সমর্পণ। বড় উদাস তাই সে দেবী, বিরান। ভাবছিলাম আজ, বয়স ভাবায়, এখন বাড়িতে থাকি, সামনে বহুযুগ ধরে চলে আসা পুজোর পট খানি, মাটির দোয়াত, খাগের কলম, হয়তো তারাই ভাবাল। দেখলাম পিতলের পুষ্পপত্র উপচে পড়ছে ফুলে। কিন্তু শিকড় ছিঁড়ে গেলে যে কোনো কিছুই বড় মৃত মনে হয় আমার, ফুল তার ব্যতিক্রম নয়। দেখতে ইচ্ছে হয় পলাশকে, ছুঁয়ে, একবার... কত কিছুই তো আজও হলো না, সম্ভবত কোনো কিছুই না হওয়াকে 'এক কথায় প্রকাশ' করতে হলে 'জীবন' শব্দটা লাগে।

No comments:

Post a Comment